Advertisements


ঘূর্ণিঝড় কিভাবে সৃষ্টি হয়? বাংলা আর্টিকেল

  • Post category:Educational
  • Post last modified:2024-05-13
  • Reading time:2 mins read
  • Post author:
ঘূর্ণিঝড়  কিভাবে সৃষ্টি হয়?

ঘূর্ণিঝড় কিভাবে সৃষ্টি হয়? 

ঘূর্ণিঝড় এর ভয়াবহতা সম্পর্কে আমরা কমবেশি সবাই অবগত। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় কিভাবে সৃষ্টি হয় তা হয়তো আমরা অনেকে বলতে পারবো না। আসুন সংক্ষেপে আপনাদের বোঝাতে চেষ্টা করি ঘূর্ণিঝড় কিভাবে সৃষ্টি হয়?

সাগরে কোন একটি নির্দিষ্ট স্থানে যখন জলের তাপমাত্রা +26°সে. থেকে +30°সে. এর ভেতরে থাকে ( এখানে বলে রাখা ভালো যে সাগরের জলের এই তাপমাত্রা কমপক্ষে জলের ৫০ ফিট নিচু পর্যন্ত পৌছাতে হবে) তখন সেখানে খুবই দ্রুত গতিতে জল বাষ্পে পরিনত হয়ে দ্রুত গতিতে উপরের দিকে উঠতে থাকে, ফলে সেই স্থানে বায়ুচাপ বেশ হ্রাস পায়, ফলে আশেপাশের এলাকা থেকে বাতাস সেই ফাকা স্থানের দিকে দ্রুত বেগে আসতে থাকে, এবং বাতাস সেখানে এসে পুনরায় গরম হয়ে প্রচুর জলীয়বাস্প নিয়ে আবার দ্রুত উপরের দিকে উঠতে থাকে, আর এ প্রক্রিয়া সমানে চলতে থাকে।

•পৃথিবীর আহ্নিক বা ঘূর্ণন গতির ফলে বাতাস সেই স্থানের দিকে যাবার সময় উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাটার বিপরীত দিকে ঘুরতে ঘুরতে প্রবাহিত হয়ে সে স্থানে গিয়ে একটি ঘূর্ণনের সৃষ্টি করে। আর ঐ স্থানে প্রচুর তাপ থাকার দরুণ বাতাস প্রতিবার ঐ স্থানে প্রবেশ করার সাথে সাথে গরম হয়ে উপরে উঠতে থাকে এবং একপর্যায় ওখানে বাতাসের একটি ঘূর্ণীপাক সৃষ্টি হয়। এবং এই ঘূর্ণীপাক এর বাতাসের গতীবেগ ও আকৃতি সময়ের সাথে সাথে বৃদ্ধি পেতে থাকে।

আরো দেখুনঃ ঘূর্ণিঝড় এর ক্যাটাগরি সমুহ

এবং এটি একপর্যায়ে লঘুচাপ তারপর নিন্মচাপ, তারপর গভীর নিন্মচাপ, তারপর অতি গভীর নিন্মচাপ ও আরোও শক্তি বৃদ্ধি করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিনত হয়।
এবং এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিনত হওয়ার পর সাগরে বেশি উপযুক্ত পরিবেশ পেলে এটি ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় বা Super Cyclone এ পরিনত হয়।


তখন এর কেন্দ্রের আশেপাশে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘন্টায় ২২০ থেকে ২৫০ কিলোমিটার বা তারও বেশি হয়ে যায়।
এবং একপর্যায় এটি কোন এক উপকূলে আঘাত করার পর স্থলভাগে উঠে আসলে তার কেন্দ্রে জলীয়বাষ্প সঞ্চয় বন্ধ ও স্থলভাগ সাগরের মতো ফাকা না থাকায় স্থলভাগে অবস্থিত গাছপালা, পাহাড় পর্বত বা অন্য কোন কিছুতে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে তার কেন্দ্রের দিকে আগের মতো আর বায়ু প্রবাহিত না হওয়ার কারনে একপর্যায় ঝড়টি তার শক্তি হারায়।

সাধারনত একটি ঘূর্ণিঝড় সাগরে সর্বোচ্চ ৫ দিন অবস্থান করে, এর ভেতরেই ঘূর্ণিঝড় টি হয়তো কোন উপকূলে আঘাত করে দূর্বল হয়ে যায় নয়তো অনেক বেশি সময় সাগরে থাকার ফলে তার কেন্দ্র অনেক শক্তি সঞ্চয় করে একপর্যায় সাগরে বিলিন হয়ে যায়।

•ঘূর্ণিঝড় সাধারনত নিরক্ষ রেখা থেকে ৫ থেকে ৩০° উত্তর বা দক্ষিন অক্ষরেখার ভেতরে তৈরি হয়ে থাকে, এবং এটি উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাটার বিপরীত দিকে এবং দক্ষিন গোলার্ধে ঘড়ির কাটার দিকে ঘুরপাক খায়।

নিরক্ষ রেখার ৫° এর ভেতরে কোন ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে পারেনা। কারণ নিরক্ষ রেখার আশেপাশে কোন ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে ঘূর্ণিঝড় এর নিজস্ব আকৃতির কোন অংশ নিরক্ষ রেখার বিপরীত পাশে চলে গেলে পৃথিবীর আহ্নিক গতীর ফলে সেই অংশের গতি তার বিপরীত দিকে হতেহবে। যার ফলে দুই দিকের বাতাসের গতি একটি অপরটির বিপরীতমূখী হওয়ায় ঘূর্ণনশক্তি কমে গিয়ে প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে।
আর সেটা হওয়া আদৌ কোনদিন সম্ভব নয়, সুতরাং নিরক্ষ রেখার আশেপাশে সাধারণত ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়না।

•প্রতিবছর পৃথিবীতে গড়ে ৮০ টি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়, এবং তার মধ্যে সামান্য কয়েকটি ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আঘাত করতে পারে। তবে যে কয়টি ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আঘাত করে তার বেশিরভাগ ঘূর্ণীঝড় উপকূলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করতে সক্ষম হয়।
•পারতপক্ষে ঘূর্ণিঝড় কে বিপদের কারন মনে হলেও প্রাকৃতিক ভারসম্য রক্ষার জন্য ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়া খুবুই গুরুত্বপূর্ণ। কারন এই ঘূর্ণিঝড় এর সাহায্যে পৃথিবীর সকল দেশের তাপের সমতা ঠিক থাকে। যদি ঘূর্ণিঝড় না সৃষ্টি হতো তাহলে পৃথিবীর মেরু অঞ্চল আরোও ভয়াবহ ঠান্ডা হয়েযেতো, এবং নিরক্ষ অঞ্চল ভয়াবহ উষ্ণ হয়ে যেতো, ফলে পৃথিবী আমাদের থাকার পক্ষে আর অনুকুল থাকতো না।

আমাদের দেশে সাধারনত এপ্রিল টু জুন ও অক্টোবর টু ডিসেম্বর এর ভেতরে বেশিরভাগ ঘূর্ণিঝড় দ্বারা আক্রান্ত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে। জানিনা আপনাদের কেমন বোঝাতে পারলাম। ভালো লাগলে এই আর্টিকেলটি শেয়ার করবেন।
ধন্যবাদ : পারভেজ আহমেদ পলাশ
BANGLADESH WEATHER OBSERVATION TEAM- BWOT

Advertisements


Advertisements