প্রায় সারা দেশেই বর্তমানে খরা প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে দেশের বিভিন্ন অংশে তাপ প্রবাহ বিভিন্ন মাত্রায় বয়ে যাচ্ছে। তীব্রতার দিক থেকে দেশের পশ্চিমাঞ্চলের দিকে সর্বোচ্চ তীব্রতা দেখা যাচ্ছে এবং দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে সর্বনিম্ন তীব্রতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত দেশের পশ্চিমাঞ্চলে ও দেশের অভ্যন্তরে কোথাও কোথাও মাঝারি মাত্রার তাপ প্রবাহ লক্ষ্য করা গেছে যা পরবর্তীতে দেশের পশ্চিমাঞ্চলের কোথাও কোথাও তীব্র তাপ প্রবাহে রূপ নিতে পারে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই তাপ প্রবাহ শেষ হয়ে কি সিলেটের হাওর অঞ্চলে বন্যার কোন সম্ভাবনা আছে যেটা বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে?
বন্যার পূর্বাভাসে যেতে হলে আগে দেখতে হবে বর্তমান খরা প্রবাহ ও তাপ প্রবাহ আরো কতদিন চলতে পারে?
মূলত বর্তমান খরা প্রবাহ সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু অংশ ব্যতীত এবং চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু অংশ ব্যতীত প্রায় এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত (অন্তত ২৭ এ এপ্রিল) দেশে চলমান থাকতে পারে। সেইসাথে তাপ প্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
তবে এপ্রিলের শেষ দিকে দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে ঝড় বৃষ্টির জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি হতে পারে। যা সেখানে নিয়মিত কিছু বজ্রবৃষ্টি ঘটাতে পারে। বিশেষ করে, সিলেট, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু অংশে। দীর্ঘ দিনের খরায় বেশিরভাগ স্থানে তৈরি হয়েছে পানি শূন্যতা, যা সামনের দিনগুলোতে পানি সংকটের সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে ভূগর্ভস্থ পানির লেয়ার নিচে নেমে যেতে পারে এতে অনেকের নলকূপে পানি উঠতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই অবস্থায় সম্ভাব্য বৃষ্টিপাত চলমান পানি সংকটকে প্রশমিত করার কাজে লেগে যাবে উক্ত অঞ্চলে। সেই সাথে নদীগুলোতে পানির স্তর অনেক নিচে রয়েছে। তাই যে কোন বৃষ্টিপাতের পানি সহজে নদী দিয়ে চলে যেতে পারে।
তবে এটাও প্রশ্ন থাকতে পারে যে পাহাড়ের ঢলে তো রাতারাতি বন্যা হয়ে যায়, তার কি কোন সম্ভাবনা আছে?
মূলত পাহাড়ি ঢল হতে হলে মেঘলয় ও সিলেট সীমান্ত এলাকায় (চেরাপুঞ্জি) ২৪ ঘন্টার মধ্যে ২৫০মিমি+ বৃষ্টি হতে হবে পরপর কয়েকদিন। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এত বৃষ্টি হওয়ার মতো কন্ডিশন আপাতত এপ্রিল এর শেষ পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না। বরং স্বাভাবিক বৃষ্টি বলয়ের মাধ্যমে কিছু ঝড় বৃষ্টিই(২০-৭৫মিমি/দিন) থাকতে পারে এপ্রিলের শেষে। যা সেখানে তাপ প্রবাহ থেকে মুক্তি দিতে পারে। এবং পানির চাহিদা পূরণ করতে পারে।
সুতরাং, এতে খরার পর পানি সংকটপূর্ণ হয়ে এত দ্রুত বন্যা হওয়ার মত বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম ইনশাআল্লাহ। বরং বেশিরভাগ স্থানে খরা প্রবাহের কারণে পানি সংকট তৈরি হওয়ার ঝুঁকিই বর্তমান।
তাই এপ্রিলের শেষে সিলেট বিভাগ ও তার আশেপাশের অঞ্চলে বন্যার পূর্বাভাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মত কোন কারণ নেই। বরং স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত চালু হতে পারে 20 তারিখের পর, তাই মাঝে মাঝেই বজ্র বৃষ্টির জন্য সতর্ক থাকলেই চলবে এবং যাদের উত্তলনযোগ্য ফসল রয়েছে জমিতে সেগুলো সতর্কভাবে সংগ্রহ করে নিলেই হবে। আর এর পরবর্তী সময়ে যদি কোন বড় বৃষ্টি বলয় পাওয়া যায় যার থেকে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হতে পারে তবে অবশ্যই তা “বি ডব্লিউ ও টি” হতে জানিয়ে দেয়া হবে ।
Advertisements