Advertisements


বর্ষার বিশেষ দীর্ঘমেয়াদি আপডেট: ৬ ই জুন হতে সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত।

কেমন থাকতেপারে এইবছর বর্ষার আবহাওয়া বাংলাদেশ ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায়?

দেশের উপরদিয়ে বর্তমানে শক্তিশালী তাপপ্রবাহ অগ্নি ২ বয়েযাচ্ছে, এবং এইবছর দেশের উপরদিয়ে বেশ কয়েকটি শক্তিশালী তাপপ্রবাহ বয়েযায়। ফলাফল এইবছর বেশ শক্তিশালী একটা গ্রীষ্মকাল পার হচ্ছে।
অতিরিক্ত তাপে স্থলভাগে শক্তিশালী নিম্নচাপ তৈরি হয় যা মৌসুমী বায়ু কে শক্তিশালী করে। যেহেতু এবার গ্রীষ্মকালে প্রচুর তাপপ্রবাহ চলেছে সেই হিসেবে এইবছর বর্ষায় শক্তিশালী বৃষ্টিবলয় থাকা উচিৎ।

যদিও গ্রোবাল প্যারামিটার অনুযায়ী বাংলাদেশ ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় বৃষ্টির পরিমান বেশ কম হবার কথা, তারপরও আমরা আশাবাদী এইবছর দেশে ও দেশের পার্শ্ববর্তী এলাকায় কয়েক দফায় বেশ ভালো বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।

মূলত ৮/৯ জুন টেকনাফ দিয়ে মৌসুমি বায়ু দেশে প্রবেশ শুরু করতে পারে। ১২ ই জুনের পরপরই মৌসুমী বায়ু দেশের অভ্যন্তরে বিস্তার করা শুরু করতে পারে এবং ২০ শে জুনের ভেতরে মৌসুমী বায়ু সম্পুর্ণভাবে দেশের সকল এলাকায় সক্রিয় হয়ে যেতে পারে।


তবে জুন মাসে দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশ কম বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।
আগামী ১২ ই জুনের পর হতে তাপপ্রবাহ কিছুটা কমলেও স্বাভাবিক হয়ে আসতে ২০ শে জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতেপারে।
১২ ই জুন হতে ১৭ ই জুন পর্যন্ত দেশের উপরে একটি আংশিক বৃষ্টিবলয় আসছে যার নাম হবে বৃষ্টিবলয় “স্পার্ক”। এই বৃষ্টিবলয়ে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি থাকতে পারে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে। সেইসাথে রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগেও মোটামুটি। এবং ঢাকা বিভাগে কিছুটা, সবচেয়ে কম খুলনা, রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগে।
তারমানে স্পার্ক চলাকালীন সময়েও রাজশাহী, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের বেশ কিছু এলাকায় ও রংপুর বিভাগের কিছু অংশে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

তবে জুনের ২০ তারিখের পর শক্তিশালী পূর্ণাঙ্গ মৌসুমী বৃষ্টি বলয় রিমঝিম দেশের উপর সক্রিয় হলে গরমের তীব্রতা অনেক কমে আসবে ইনশাআল্লাহ। ও দেশের অনেক এলাকায় বৃষ্টির চাহিদা পুরন হয়ে হতে পারে আশাকরি।

সিস্টেম : চলতি বর্ষা মৌসুমে বঙ্গপোসাগরে ৭ থেকে ৮ টি সিস্টেম তৈরি হতেপারে এদের ভেতরে ২/৩ টি সিস্টেম নিম্নচাপে পরিনত হতেপারে।
জুন মাসে ১/২ টি, জুলাই মাসে ১ টি, আগস্ট মাসে ২ টি ও সেপ্টেম্বর মাসে ২/৩ টি সিস্টেম তৈরি হতেপারে। তবে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা কম, আর হলেও দুর্বল ঘূর্ণিঝড় হতেপারে।
অধিকাংশ সিস্টেম উড়িষ্যা থেকে বরিশাল উপকূলের ভেতরে আঘাত করতেপারে।
ফলাফল এইসকল এলাকায় এইবার বর্ষার সময় সিস্টেম জনিত ভারিবর্ষন এর আশা করা যায়।

চলতি বছর বর্ষা মৌসুমে ভারতের বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গতবছর অপেক্ষা অনেক বেশি বৃষ্টি হতেপারে, ফলে ঐসকল এলাকার নিচু এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হতেপারে।
বিহার ও এর পার্শ্ববর্তী রাজ্যে এবং ভারতের উত্তরবঙ্গে বেশি বৃষ্টি হবার কারনে গঙ্গা / পদ্মা নদীর পানি বেশ বৃদ্ধি পেতে পারে ও দেশের তিস্তা নদীর পানিও বেশ বৃদ্ধি পেতেপারে। চলতি বর্ষা মৌসুমে রংপুর, রাজশাহী, সিলেট, ময়মনসিংহ বিভাগ ও দেশের মধ্য অঞ্চলের বন্যা প্রবণ নিচু এলাকায় স্বাভাবিক বন্যার আশঙ্কা আছে।

চলতি বছর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ অঞ্চলে প্রায় স্বাভাবিক বৃষ্টি হতেপারে ও মধ্য অঞ্চলে স্বাভাবিক থেকে কিছুটা কম ও উত্তর অঞ্চলে স্বাভাবিক বৃষ্টি থাকতেপারে। মানে বর্ষাকালটি গতবছর অপেক্ষা বেশ শক্তিশালী হতে পারে।
এখানে কলকাতা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় গতবছর অপেক্ষা বেশ বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

অপরদিকে বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলে স্বাভাবিক বৃষ্টি ও উত্তর অঞ্চলেও স্বাভাবিক ও স্বাভাবিক থেকে কিছুটা বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তবে দেশের মধ্য অঞ্চলে বৃষ্টি তুলনামূলক বেশ কম হতেপারে, তবে গতবছর এর চেয়ে বেশি আছে।

আসুন একনজরে দেখেনেই এইবার বর্ষায় আপনার জেলায় কেমন বৃষ্টি হতেপারে।

১ / স্বাভাবিক অপেক্ষা অনেক বেশি : কক্সবাজার জেলা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা।

২/ স্বাভাবিক থেকে কিছুটা বেশি বৃষ্টি : চট্টগ্রাম, বান্দরবান, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, শেরপুর, জামালপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, রংপুর, লালমনিরহাট, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, জয়পুরহাট, ঠাকুরগাঁও পঞ্চগড় ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা।

৩ / স্বাভাবিক বৃষ্টি : সাতক্ষীরা, যশোর, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, ফেণী, নোয়াখালি, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, পাবনা, নীলফামারি, দিনাজপুর, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, নাটোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, পিরোজপুর, ঝালোকাঠি ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা।

৪ / স্বাভাবিক অপেক্ষা কিছুটা কম বৃষ্টি : খুলনা, বাগেরহাট, নড়াইল, মাগুরা, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, ঝিনাইদহ, মানিককঞ্জ, বরিশাল, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, চাঁদপুর ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা।

৫ / স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশ কম বৃষ্টি : ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, ব্রাম্মনবাড়িয়া, শরিয়তপুর, মাদারীপুর ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা।

চলতি বর্ষা মৌসুমে, মৌসুমী বৃষ্টি বলয় গুলো হলো, রিমঝিম, প্রবাহ, ঢল, ঈশান, ধারা ইত্যাদি ও তাপপ্রবাহ হলো, গুমোট।

প্রাকৃতিক কারনে এই পূর্বাভাস কিছুটা পরিবর্তন হতেপারে। এবং দীর্ঘমেয়াদি হওয়ায় কিছু অংশে অমিল থাকতে পারে।

এই পূর্বাভাস টি বেসরকারি আবহাওয়া সংস্থা BWOT হতে প্রকাশিত, কোন অফিসিয়াল বা সরকারি দাপ্তরিক পূর্বাভাস নয়। আপনারা কোন সিদ্ধান্ত নিতে চাইলে অবশ্যই দেশের সরকারি আবহাওয়া অধিদপ্তর এর পূর্বাভাস অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিবেন।
আমাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়ে আপনারা ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার দায়ভার কোনভাবেই Bangladesh Weather Observation Team নিবেনা।

ধন্যবাদ : পারভেজ আহমেদ পলাশ, প্রতিষ্ঠাতা, BWOT WEATHER.
সার্বিক সহযোগিতায়: মশিয়ার রহমান জনী, খালিদ হোসেন সহ আমাদের সকল সদস্য।
পোস্ট আপডেট : ৬ ই জুন গভীর রাত ১২ টা বেজে ১৮ মিনিটে
Post update : 6th June at 12:18 am BST. 2023

monsoon-2023-forecast

Advertisements


Advertisements